![]() ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪১৯ রবিবার ৯ ডিসেম্বর ২০১২ দাম বাড়ান, দুধ-চাষিদের হাতে মঞ্চে ঘেরাও কর্তারা | ||||||||||||||||||
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা | ||||||||||||||||||
দাম বাড়ানোর জন্য দীর্ঘদিন ধরে সরকারের কাছে দরবার করছিলেন দুধ চাষিরা। লাভ হয়নি। শনিবার দুগ্ধ দিবসের অনুষ্ঠানে সরাসরি মঞ্চে উঠে সরকারি কর্তাদের ঘেরাও করলেন তাঁরা। অবরোধ করলেন রাস্তাও। এ হেন দুগ্ধ-অবরোধের মুখে পড়ে ইস্টার্ন জোনাল কালচারাল সেন্টারে কার্যত ভেস্তেই গেল অনুষ্ঠানটি।
দুধ-চাষিদের অভিযোগ, দুধের উৎপাদন মূল্য বাড়ানোর দাবি নিয়ে রাজ্য কো-অপারেটিভ মিল্ক প্রোডিউসার্স ফেডারেশনের কাছে বারবার দরবার করেও কোনও সুরাহা মেলেনি। অথচ গো-খাদ্যের দাম দিনদিন বাড়ছে। ক্রমেই ব্যয়বহুল হচ্ছে গরু প্রতিপালন। এই পরিস্থিতিতে কিলোগ্রাম প্রতি ১৭-১৮ টাকায় সরকারকে দুধ বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না বলেই চাষিদের দাবি।
কিন্তু যে জনমোহিনী রাজনীতির দোহাই দিয়ে বাসভাড়া, রেলভাড়া বাড়াতে নারাজ ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিদ্যুৎ মাসুল বাড়াতে অনীহা ছিল তাঁর সেই একই যুক্তিতে দুধের বিক্রয়মূল্যও বাড়াতে চাইছে না রাজ্য সরকার। সেই জন্যই সম্প্রতি বিপুল আর্থিক ক্ষতি মাথায় নিয়েও দুধের দাম বাড়ানোর অনুমতি পাননি মাদার ডেয়ারি কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত তুলনায় উন্নত মানের ‘মা শক্তি’ দুধের প্যাকেট বেশি দামে বাজারে ছেড়ে ঘুরপথে কিছুটা লোকসান সামাল দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু চাষিদের উৎপাদন মূল্য বাড়েনি।
| ||||||||||||||||||
![]() | ||||||||||||||||||
চেয়ারম্যান তারক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন দুধ চাষিরা। —নিজস্ব চিত্র | ||||||||||||||||||
এ দিন দুধ চাষিদের বিক্ষোভের জেরে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ফেডারেশনের চেয়ারম্যান তথা তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক তারক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনেই রাজ্যের দুগ্ধ কমিশনার উদয়শঙ্কর নন্দী মঞ্চ থেকে জানিয়ে দেন, ইতিমধ্যেই অর্থ দফতরের কাছে দুধের উৎপাদন মূল্য কিলোগ্রাম প্রতি দু’টাকা করে বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠিয়েছে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর। কিন্তু অর্থ দফতর এখনও সিদ্ধান্ত জানায়নি। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বিক্রয় মূল্য না-বাড়িয়ে উৎপাদন মূল্য বাড়ানো কঠিন। কারণ, তাতে এমনিতেই রুগ্ণ কোষাগারের উপরে চাপ আরও বাড়বে। ফলে দাম না-বাড়ানোর একবগ্গা নীতি থেকে সরে না-এলে অবস্থা বদলাবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
দুগ্ধ দিবস উপলক্ষে এ দিনের অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল কো-অপারেটিভ মিল্ক প্রোডিউসার্স ফেডারেশন। কথা ছিল, অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন প্রাণিসম্পদ বিকাশ মন্ত্রী নূর-এ-আলম চৌধুরী। কিন্তু তিনি আসেননি। তাতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন উপস্থিত দুধ-চাষিদের একাংশ। তাঁদের আশা ছিল, মন্ত্রীকে সামনে পেলে সরাসরি দাবিদাওয়ার কথা বলবেন। সেটা না-হওয়ায় মঞ্চে উঠে সরকারি কর্তাদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা। রাতে মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কলকাতার বাইরে আছেন।
এ দিন প্রথমে দর্শক আসন থেকেই প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের অফিসারদের সঙ্গে বাদানুবাদ শুরু হয়েছিল চাষিদের। এর পরে ৫০-৬০ জন চাষি উঠে যান মঞ্চের ওপরে। ফেডারেশনের চেয়ারম্যান-সহ অন্য আধিকারিকদের ঘেরাও করে জানতে চান, কত দিনে দুধের দাম বাড়ানো হবে। কোনও প্রতিশ্রুতি না পেয়ে তাঁরা দল বেঁধে প্রেক্ষাগৃহের বাইরে বেরিয়ে রাস্তা অবরোধ করেন। আধ ঘণ্টা পরে পুলিশ অবরোধ তোলে।
| ||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||
এ রাজ্যে প্রায় ১ লক্ষ ৬৫ হাজার দুধ-চাষি রয়েছেন। চাষিদের বক্তব্য, দু’বছর আগে বাম আমলে শেষ বার দুধের উৎপাদন মূল্য বাড়িয়েছিল রাজ্য সরকার। তার পর বহু বার দাম বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। কেন? প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বিধানসভা ভোটের আগে দুধের দাম বাড়ানোর ঝুঁকি নিতে চায়নি বাম সরকার। আর ভোটের পরে নতুন সরকার ক্ষমতায় এসে ইস্তক কোনও পরিষেবার জন্য বাড়তি দাম না-নেওয়ার নীতি নিয়েই এগিয়েছে। বিক্রয় মূল্য না বাড়ানোর গেরোতেই আটকে গিয়েছে উৎপাদন মূল্যও। ফলে ফেডারেশন নতুন সরকারের কাছে উৎপাদন মূল্য বাড়ানোর দাবি পেশ করলেও তা ফাইলবন্দি হয়ে পড়ে রয়েছে।
প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, প্রতিদিন বিভিন্ন সমবায় থেকে মোট আড়াই লক্ষ লিটার দুধ সংগ্রহ করে রাজ্য সরকার। দুধ কিনতে রোজ ৪০ লক্ষ টাকা খরচ হয়। দু’টাকা করে দাম বাড়ালে বাড়তি পাঁচ লক্ষ টাকা খরচ হবে সরকারের। অর্থ দফতর এখনও তাতে সবুজ সঙ্কেত দেয়নি।
কিন্তু চাষিদের দাবি যে যথার্থ, তা মেনে নিয়েছেন ফেডারেশনের চেয়ারম্যানও। তারকবাবু বলেন, “এই দামে সত্যিই দুধ দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু চাষিদের উৎপাদন মূল্য বাড়ানোর ক্ষমতা ফেডারেশনের নেই। প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরকে বলেও কিছু হচ্ছে না।”
ফেডারেশনের অধিকর্তা জি নামচু-ও মঞ্চে দাঁড়িয়ে স্বীকার করেন, দুধের উপযুক্ত দাম না-পেয়ে গরু বিক্রি করে দিচ্ছেন অনেক চাষিই। অনেকেই বেশি লাভের আশায় বেসরকারি সংস্থার কাছে কিংবা ভিন রাজ্যে দুধ বিক্রি করছেন। কিন্তু যে সব চাষির পুঁজি কম, তাঁরা সেই পথেও আয় করতে পারছেন না। ফলে এক রকম বাধ্য হয়েই সরকারের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হচ্ছে ওই দুধ চাষিদের।
|
Welcome
We welcome to view this site as it reflects the state of the art of the dairy industry in West Bengal and the options remaining before the workers of the dairy industry to enhance their standard of living. You can post your views, suggestions etc against each publications which appear in this page or email us at wbsdef@gmail.com or wbsdef@yahoo.co.in
Search This Blog
Sunday, December 9, 2012
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment