ভালো মানুষ - ভুল চিন্তা - ভুলপথ
জয় গণতন্ত্রের জয় I জয় জনগনের জয় I জয় দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষের সংগ্রামের জয় I এই জয়ধনির মধ্য দিয়ে অবশেষে লোকপাল বিল গ্রহনের দাবিকে মেনে নিল ভারত সরকার I আজ দুর্নীতির বিরুদ্ধে লাগাতার সংগ্রামের অপর নাম হয়ে উঠলো আন্না হাজারে I ডাবের জল পানের মধ্য দিয়ে অবসান হ'ল আন্না হাজারের ৫ দিনের অনশন ধর্মঘট I আলোচনার মাধ্যমে সরকার পক্ষ ও অনশনকারীরা উভয়ে এই সিধান্তে উপনীত হলেন, লোকপাল বিলের খসড়া প্রস্তুত করতে গঠিত হবে ১০ সদস্যের "যুগ্ম লোকপাল খসড়া বিল কমিটি"I কেন্দ্রীয় সরকার উক্ত কমিটির সদস্যদের নাম সহযোগে কমিটি গঠনের কথা সরকারি আদেশ মারফত জানাবেন I উক্ত কমিটি বাদল অধিবেশনের আগে তাদের খসড়া প্রস্তাব প্রস্তুত করবে I কেন্দ্রীয় সরকার ক্যাবিনেটে সেই প্রস্তাব পাশ করে লোকসভায় বাদল অধিবেশনে বিল আকারে তা সর্বসম্মতিতে গ্রহনের জন্য পেশ করবেI
কারা হলেন এই "যুগ্ম লোকপাল খসড়া বিল কমিটির" সদস্যI তাও ঠিক হ'ল আলোচনায় I কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে থাকবেন ৫ জন সদস্য এবং সুশীল সমাজের পক্ষে থাকবেন ৫ জন সদস্য I সরকারের পক্ষে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রী শ্রী প্রণব মুখার্জী হবেন এই কমিটির চেয়ারমান I অন্য সদস্যরা হলেন কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রী বীরাপ্পা মইলি, কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রী কপিল সিব্বল, কেন্দ্রীয় জল সম্পদ মন্ত্রী সালমন খুরশিদ ও কেন্দ্রীয় অভ্যন্তরীণ প্রতিরক্ষা (স্বরাস্ট্র) মন্ত্রী পি চিতাম্বরম I শ্রী বীরাপ্পা মইলি হবেন কমিটির আবাহক . সুশীল সমাজের পক্ষে থাকবেন আন্না হাজারে, প্রসিদ্ধ আইনজীবি শান্তি ভূষণ ও প্রশান্ত ভূষণ, কর্ণাটকের লোক্যাউক্ত ও সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারক সন্তোষ হেগড়ে এবং RTI activist অরবিন্দ কেজ্রিবল I এই কমিটির সহ চেয়ারমান হবেন শ্রী সন্তোষ হেগড়ে I
এদিকে বাঙ্গালোরে শ্রী হেগড়ে শুক্রবার পরিষ্কারভাবেই জানিয়েছেন, তিনি ওই কমিটিতে থাকতে চান না I তিনি নিজের পরিবর্তে ওই কমিটির জন্য বিচারক জে.এস ভার্মার নাম প্রস্তাব করেছেন I তিনি অবশ্য একই সাথে সন্দেহও প্রকাশ করেছেন যে শ্রী জে.এস ভার্মা উক্ত কমিটিতে থাকতে চাইবেন না I
সবই তো হ'ল I কিন্তু এত কিছুর পরেও দুর্নীতির পরাজয় বা অবসান ঘটবে তো ? হাজারের ডাকে যে হাজারে হাজারে মানুষ পথে নামলেন তাদের আশা আকাঙ্খার স্বপ্ন পূরণ হবে তো ? কিন্তু কিভাবে ? লোকপাল বিলকে আইনে পরিবর্তনের মাধ্যমে কি ?
লোকপাল বিল লোকসভায় পাশ হলে তা আইনে পরিনত হবে I বলা হচ্ছে এই নব লোকপাল আইন হচ্ছে বিশেষ আইন, তা পাশ হলে সংসদ, আমলা এবং বিচারপতিদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিশেষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে . এই কথার কোনো মূল্য আছে কি ? না, সম্পূর্ণ অসত্য কথা এবং লোক ঠকানোর কথা I তার কারণ.....
ভারত নামক রাষ্ট্রটির সংবিধান মোতাবেক আইন প্রস্তুতের দ্বায়িত্ব হ'ল আইন সভার (যথা লোকসভা,রাজ্য সভা,বিধানসভা ), শাসনের দ্বায়িত্ব হ'ল শাসনসভার বা শাসন কর্তাদের বা আমলাদের এবং বিচারের দ্বায়িত্ব হ'ল বিচারসভার বা বিচারালয়ের বা বিচারকদের I বলা হয়ে থাকে ভারত হ'ল একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র I গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অর্থ হ'ল দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য সমান আইনি, শাসন এবং বিচার ব্যবস্থা চালু আছে I কিন্তু লোকপাল আইন হ'ল একটি বিশেষ আইন এবং যা কেবল সংসদ, আমলা এবং বিচারপতিদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিশেষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহনের উদ্দেশ্যেই গঠিত I এই আইন প্রকৃতপক্ষে সম্পূর্ণরূপে সংবিধান বিরোধী কারণ তা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সকলের জন্য সমান ব্যবস্থার নীতিটি লঙ্ঘন করে I তাই নির্দিধায় বলা যায় লোকপাল বিলটি সংবিধান অনুযাই নাগরিকের সমানাধিকারকে লঙ্গন করলে তা লোকসভা কিম্বা রাজ্য সভায় কোনভাবেই পাশ হবে না I ভারতের সংবিধান মেনে চলা কোনো রাজনৈতিক দল এবং তাদের সংসদরা অতি-সাংবিধানিক কোনো আইনই পাশ করতে পারবেন না I
তাই, এই জয় ক্ষনিকের জয় . এই জয় নবরূপে প্রতারিত হওয়া ছাড়া কিছুই নয় I দুর্নীতির বিরুদ্ধে জয় তো নয়ই I এছাড়াও আন্না হাজারের চিন্তা চেতনায় বড়ই গলধ I প্রশ্ন উঠবেই, আন্না হাজারে কি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং তার রীতিনীতি বোঝেন না, নাকি মানেন না I ভারতে সংবিধান অনুযাই দুর্নীতি প্রতিরোধে দুর্নিতিরোধক অভিন্ন আইন আছে, অভিন্ন বিচার ব্যবস্থা আছে, বিচারে কেউ অপরাধী সাবস্ত হলে, শাস্তি লাগুর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অভিন্ন শাসনতন্ত্র রয়েছে I তাহলে, শ্রী হাজারে এই ব্যবস্থার উর্ধ্যে অন্য কোনো বিকল্প বা সতন্ত্র ব্যবস্থা চাইছেন নাকি ? না, তা ঠিক নয় I দুর্নীতিমূলক ব্যবস্থাটা পাল্টাবার কোনো কথাই উনি বলছেন না I আসলে উনি বলছেন তা হ'ল একটি বিশেষ আইনের কথা I যা নাকি বিশেষ বিশেষ নাগরিকের ক্ষেত্রেই লাগু করা হবে I এ কেমন কথা হ'ল, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নাগরিক বিশেষে ভিন্ন ভিন্ন আইন চালু করা যায় নাকি ? না, উনি গণতন্ত্রের ধার ধারেন না I ওনার প্রস্তাব অনুযাই কেন্দ্রীয় সরকার "যুগ্ম লোকপাল খসড়া বিল কমিটিতে" সুশীল সমাজের যে ৫ জন সদস্যদের নাম গ্রহণ করেছে, তাদের কেউই তো জনগনের দ্বারা নির্বাচিত নন I বরং সরকার পক্ষের যে ৫ জন ওই কমিটিতে থাকবেন তারা জনগনের দ্বারা নির্বাচিত I তাহলে, তো গোড়ায় বিসমিল্লা I দুর্নীতি দমন করবেন, আইন পাশ করবেন, তারা জনগনের দ্বারা নির্বাচিত হবেন না I এটাই হ'ল দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রামে মহান নেতার বক্তব্য I দুর্নীতি দমন হবে অগণতান্ত্রিক পথে . ইহা যদি সৈরতন্ত্র না হয় , তবে ইহা কি?
একথা অবশ্যই ঠিক এবং অনশিকার্য্য যে আন্না হাজারে অত্যন্ত নিরাভরণ জীবন যাপন করেন I বাক্তিগতভাবে অতন্ত্য সত, সাদাসিধে ও একজন একনিষ্ঠ গান্ধীবাদী মানুষ I এমনকি উনি আন্তরিকভাবে দুর্নীতির অবসান চাইতেই পারেন I কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, তার চিন্তা চেতনায় গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক পথ ও দুর্নীতির অবসান সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা আছে I একই সাথে যুগপথ এটা দুঃখের ও দুর্ভাগ্যেরও কথা যে কেন্দ্রীয় সরকার এরই সুযোগ নিল এবং আন্না হাজারের মত দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রামে সামিল হাজার হাজার সত দেশবাসীকে বহুবারের মত আবার ঠকালো I তাই উদ্বাহু হয়ে সবাই মিলে একযোগে বল ভাই, "জয় ভারতীয় গণতন্ত্রের জয় "I "জয় জনগনের জয়" I
এদিকে বাঙ্গালোরে শ্রী হেগড়ে শুক্রবার পরিষ্কারভাবেই জানিয়েছেন, তিনি ওই কমিটিতে থাকতে চান না I তিনি নিজের পরিবর্তে ওই কমিটির জন্য বিচারক জে.এস ভার্মার নাম প্রস্তাব করেছেন I তিনি অবশ্য একই সাথে সন্দেহও প্রকাশ করেছেন যে শ্রী জে.এস ভার্মা উক্ত কমিটিতে থাকতে চাইবেন না I
সবই তো হ'ল I কিন্তু এত কিছুর পরেও দুর্নীতির পরাজয় বা অবসান ঘটবে তো ? হাজারের ডাকে যে হাজারে হাজারে মানুষ পথে নামলেন তাদের আশা আকাঙ্খার স্বপ্ন পূরণ হবে তো ? কিন্তু কিভাবে ? লোকপাল বিলকে আইনে পরিবর্তনের মাধ্যমে কি ?
লোকপাল বিল লোকসভায় পাশ হলে তা আইনে পরিনত হবে I বলা হচ্ছে এই নব লোকপাল আইন হচ্ছে বিশেষ আইন, তা পাশ হলে সংসদ, আমলা এবং বিচারপতিদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিশেষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে . এই কথার কোনো মূল্য আছে কি ? না, সম্পূর্ণ অসত্য কথা এবং লোক ঠকানোর কথা I তার কারণ.....
ভারত নামক রাষ্ট্রটির সংবিধান মোতাবেক আইন প্রস্তুতের দ্বায়িত্ব হ'ল আইন সভার (যথা লোকসভা,রাজ্য সভা,বিধানসভা ), শাসনের দ্বায়িত্ব হ'ল শাসনসভার বা শাসন কর্তাদের বা আমলাদের এবং বিচারের দ্বায়িত্ব হ'ল বিচারসভার বা বিচারালয়ের বা বিচারকদের I বলা হয়ে থাকে ভারত হ'ল একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র I গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অর্থ হ'ল দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য সমান আইনি, শাসন এবং বিচার ব্যবস্থা চালু আছে I কিন্তু লোকপাল আইন হ'ল একটি বিশেষ আইন এবং যা কেবল সংসদ, আমলা এবং বিচারপতিদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিশেষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহনের উদ্দেশ্যেই গঠিত I এই আইন প্রকৃতপক্ষে সম্পূর্ণরূপে সংবিধান বিরোধী কারণ তা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সকলের জন্য সমান ব্যবস্থার নীতিটি লঙ্ঘন করে I তাই নির্দিধায় বলা যায় লোকপাল বিলটি সংবিধান অনুযাই নাগরিকের সমানাধিকারকে লঙ্গন করলে তা লোকসভা কিম্বা রাজ্য সভায় কোনভাবেই পাশ হবে না I ভারতের সংবিধান মেনে চলা কোনো রাজনৈতিক দল এবং তাদের সংসদরা অতি-সাংবিধানিক কোনো আইনই পাশ করতে পারবেন না I
তাই, এই জয় ক্ষনিকের জয় . এই জয় নবরূপে প্রতারিত হওয়া ছাড়া কিছুই নয় I দুর্নীতির বিরুদ্ধে জয় তো নয়ই I এছাড়াও আন্না হাজারের চিন্তা চেতনায় বড়ই গলধ I প্রশ্ন উঠবেই, আন্না হাজারে কি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং তার রীতিনীতি বোঝেন না, নাকি মানেন না I ভারতে সংবিধান অনুযাই দুর্নীতি প্রতিরোধে দুর্নিতিরোধক অভিন্ন আইন আছে, অভিন্ন বিচার ব্যবস্থা আছে, বিচারে কেউ অপরাধী সাবস্ত হলে, শাস্তি লাগুর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অভিন্ন শাসনতন্ত্র রয়েছে I তাহলে, শ্রী হাজারে এই ব্যবস্থার উর্ধ্যে অন্য কোনো বিকল্প বা সতন্ত্র ব্যবস্থা চাইছেন নাকি ? না, তা ঠিক নয় I দুর্নীতিমূলক ব্যবস্থাটা পাল্টাবার কোনো কথাই উনি বলছেন না I আসলে উনি বলছেন তা হ'ল একটি বিশেষ আইনের কথা I যা নাকি বিশেষ বিশেষ নাগরিকের ক্ষেত্রেই লাগু করা হবে I এ কেমন কথা হ'ল, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নাগরিক বিশেষে ভিন্ন ভিন্ন আইন চালু করা যায় নাকি ? না, উনি গণতন্ত্রের ধার ধারেন না I ওনার প্রস্তাব অনুযাই কেন্দ্রীয় সরকার "যুগ্ম লোকপাল খসড়া বিল কমিটিতে" সুশীল সমাজের যে ৫ জন সদস্যদের নাম গ্রহণ করেছে, তাদের কেউই তো জনগনের দ্বারা নির্বাচিত নন I বরং সরকার পক্ষের যে ৫ জন ওই কমিটিতে থাকবেন তারা জনগনের দ্বারা নির্বাচিত I তাহলে, তো গোড়ায় বিসমিল্লা I দুর্নীতি দমন করবেন, আইন পাশ করবেন, তারা জনগনের দ্বারা নির্বাচিত হবেন না I এটাই হ'ল দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রামে মহান নেতার বক্তব্য I দুর্নীতি দমন হবে অগণতান্ত্রিক পথে . ইহা যদি সৈরতন্ত্র না হয় , তবে ইহা কি?
একথা অবশ্যই ঠিক এবং অনশিকার্য্য যে আন্না হাজারে অত্যন্ত নিরাভরণ জীবন যাপন করেন I বাক্তিগতভাবে অতন্ত্য সত, সাদাসিধে ও একজন একনিষ্ঠ গান্ধীবাদী মানুষ I এমনকি উনি আন্তরিকভাবে দুর্নীতির অবসান চাইতেই পারেন I কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, তার চিন্তা চেতনায় গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক পথ ও দুর্নীতির অবসান সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা আছে I একই সাথে যুগপথ এটা দুঃখের ও দুর্ভাগ্যেরও কথা যে কেন্দ্রীয় সরকার এরই সুযোগ নিল এবং আন্না হাজারের মত দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রামে সামিল হাজার হাজার সত দেশবাসীকে বহুবারের মত আবার ঠকালো I তাই উদ্বাহু হয়ে সবাই মিলে একযোগে বল ভাই, "জয় ভারতীয় গণতন্ত্রের জয় "I "জয় জনগনের জয়" I
অভিজিত রায়
উপরোক্ত রচনাটির দায় ও দ্বায়িত্ব সম্পূর্ণরূপে আমার, পশিমবঙ্গ রাজ্য ডেয়ারী এমপ্লয়ীজ ফেডারাসন কোনভাবে দ্বায়ী নয় I
অভিজিত রায়
No comments:
Post a Comment